Google AdSense কি? কিভাবে এডসেন্স থেকে ইনকাম করবেন?

গুগলের নাম নিশ্চয়ই শুনেছেন। কিন্তু গুগল অ্যাডসেন্স (Google AdSense) ওয়েবসাইটটির নাম শুনেছেন কি? আসলে এটি গুগল পরিবারের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ বা প্লাটফর্ম বললেই চলে। এডসেন্স আসলে ওয়েবসাইট ও ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন উভয়রূপেই উপস্থিত। এমনিতে গুগল দ্বারা পরিচালিত এই ওয়েবসাইটটি পাবলিশারদের কাছে অর্থ উপার্জনের একটি দারুন সুযোগ তৈরি করে দিতে পারে।

কেননা, এডসেন্সকে কাজে লাগিয়ে আপনি অনলাইনে পার্ট-টাইম বা ফুল-টাইম দুভাবেই ইনকাম করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনি নিজের অনলাইন ব্লগ সাইটের মধ্যে প্রকাশিত কন্টেন্টের মধ্যে বিভিন্ন স্থানে অ্যাড দেখানোর মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। তবে এডসেন্স দ্বারা দেখানো বিজ্ঞাপনের প্রকারভেদ আছে।

গুগল এডসেন্স মূলত ডিসপ্লে বিজ্ঞাপন, টেক্সট বিজ্ঞাপন, ভিডিও বিজ্ঞাপন ইত্যাদি নানান ধরণের বিজ্ঞাপন গুলো দেখিয়ে থাকে। বিজ্ঞাপনের ক্যাটাগরি, অবস্থান ও কন্টেন্টের প্রকৃতি অনুযায়ী এডসেন্স থেকে আপনার আয়ের পরিমান পরিবর্তিত হতে থাকে। এছাড়া মনে রাখা দরকার যে, যেকোনো ব্লগ বা ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন পাওয়ার জন্য বিশেষ কয়েকটি ধাপ পার করা বাধ্যতামূলক।

তবে এটা অবশই মনে রাখতে হবে যে, আপনার একটা ছোট্ট ভুলের জন্য বন্ধ টাকা আসার পথ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তবে চিন্তা করতে হবেনা, গুগল এডসেন্স নিয়ে আপনার মনের মধ্যে থাকা সমস্ত রকমের সন্দেহ দূর করার জন্য কী করা উচিত এবং কী করা উচিত নয়, গুগল অ্যাডসেন্স সংক্রান্ত বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর নিম্নে দেওয়া হল।

অবশই পড়ুন: অনলাইনে কাজ করে টাকা ইনকাম করার ওয়েবসাইট গুলো

Google AdSense কি? কিভাবে এডসেন্স থেকে ইনকাম করবেন?

গুগলের এই ফ্রী Advertisement program-টি পাবলিশারদের তাদের ব্লগ ওয়েবসাইটে থার্ড পার্টি বিজ্ঞাপন দেখিয়ে টাকা আয় করার সুযোগ দিয়ে থাকে। আসলে অ্যাডসেন্সে (AdSense), বিশ্বজুড়ে নানান অর্গানাইজেশন বা কোম্পানিরা টাকা দিয়ে বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকেন। এতে নানান কোম্পানি এবং কোম্পানির পণ্য ও পরিষেবাগুলি এডসেন্স বিজ্ঞাপন দ্বারা অনেক সহজে অনলাইনে প্রচার করা সম্ভব হয়ে দাঁড়ায়।

আবার বিজ্ঞাপন যেই ওয়েবসাইটে দেখানো হচ্ছে সেই ওয়েবসাইটের মালিকরা সেই বিজ্ঞাপনের রেভিনিউয়ের কিছু নির্দিষ্ট অংশ পেয়ে থাকে। এই রেভিনিউ মূলত এড ইম্প্রেশন ও এড ক্লিকের উপর নির্ভর করে আলাদা আলাদা হয়ে থাকে। তাহলে বুঝলেন তো Google AdSense কি?

সোজা এবং সহজ ভাবে বলতে হলে, গুগল এডসেন্স হলো এমন একটি অনলাইন প্লাটফর্ম যেখানে নিজের একটি free account তৈরি করে একজন blog / website owner বা YouTube channel owner, তাদের অনলাইনে প্লাটফর্মে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে ডলারে টাকা ইনকামের সুযোগ পেয়ে থাকেন।

রিলেটেড: গুগল থেকে কি কি উপায়ে টাকা ইনকাম করা যায়?

গুগল অ্যাডসেন্স থেকে কত টাকা আয় করা যায়?

AdSense income screenshot
AdSense income screenshot

গুগল অ্যাডসেন্স থেকে ঠিক কত টাকা আয় করা সম্ভব তা টাকা আয় করার আগে পর্যন্ত জানা মুশকিল। তবে আপনার নিশ্চিতরূপে কিছু বিশেষ ও আলাদা আলাদা বিষয়ের উপর অবশ্যই নির্ভর করে থাকে। আর এই বিষয়গুলো হল,

১. ওয়েবসাইট ট্রাফিকের পরিমাণ,

২. ওয়েবসাইটের নিচ (Niche),

৩. সাইটে অ্যাডের অবস্থান,

৪. বিজ্ঞাপনের প্রকৃতি,

৫. ভিজিটারদের ভৌগোলিক অবস্থান,

৬. ডিজিটাল অ্যাড মার্কেটের সাম্প্রতিক ডেটা।

অ্যাডসেন্স আয়ের পরিমাণ ঠিক হয় কীভাবে?

গুগল পরিবারের এই সদস্য মূলত দুই পরিমাপকের উপর সাইটগুলোর ইনকাম ঠিক করে। এই পরিমাপক দুটি হল –

১. অ্যাড ইম্প্রেশন:

এক্ষেত্রে আয়ের পরিমাণ ওয়েবসাইট ভিজিটাররা কতবার অ্যাডের মুখ দেখছে, সেটার উপর নির্ভর করে। বিজ্ঞাপন দেখার সংখ্যাকে Cost Per Mile (CPM)-এর সঙ্গে গুন করে ইম্প্রেশন প্রতি আয় ঠিক করা হয়।

২. অ্যাড ক্লিক:

এক্ষেত্রে আপনার আয় ওয়েবসাইটে দেখানো অ্যাডের উপরে হওয়া ক্লিককে কেন্দ্র করে হয়। ক্লিকের সংখ্যাকে Cost Per Click (CPC)-এর সঙ্গে গুন করে প্রতি ক্লিকে আয়ের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়।

গুগল অ্যাডসেন্স ব্যবহারের যোগ্যতা:

গুগলের পকেট থেকে নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকার আগমন ঘটানোর জন্য অবশ্যই যে কোনো ওয়েবসাইট ও ওয়েবসাইটের মালিককে গুগল অ্যাডসেন্স নির্ধারিত যোগ্যতার দাঁড়িপাল্লায় দাঁড়াতে হয়। কী কী যোগ্যতা থাকলে আয়ের মুখ দেখা শুরু করবেন? চলুন জেনে নেওয়া যাক।

১. বয়স (Age):

অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট তৈরির জন্য আবেদনকারীর বয়স ১৮ বছর বা তার বেশি হতে হবে। প্রাপ্ত বয়স্ক না হলে আবেদনকারীর অভিভাবককে অন্তত সাইন আপ করতে হবে।

২. অরিজিনাল কন্টেন্ট:

ওয়েবসাইটে প্রকাশিত কন্টেন্ট উন্নত মানের হতে হবে। পাশাপাশি অরিজিনালও হতে হবে, যাতে ভিজিটারদের সেই কন্টেন্ট ভালো লাগে এবং সাইটের এনগেজমেন্ট রেট বাড়ে।

৩. কন্টেন্টের প্রকৃতি:

গুগল অ্যাডসেন্সের প্রোগ্রাম পলিসি মেনে কন্টেন্ট পাবলিশ করতে হবে। কোনো ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট কপি করা যাবে না। পাশাপাশি কারোর কোনো কপিরাইটেড কন্টেন্ট তাদের অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। একইসঙ্গে ১৮+ কন্টেন্টও পাবলিশ করা যাবে না।

৪. মালিকানা:

আবেদনকারীর হাতে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটের মালিকানা থাকতে হবে। এছাড়াও সাইটের HTML Source Code-এর অ্যাক্সেস থাকলেও আবেদন করা যায়।

৫. নীতি লঙ্ঘন:

কঠোরভাবে পাঠক নিয়ন্ত্রিত বিষয়, যেমন ওয়েবসাইটে ভিজিটারদের কমেন্টের উপর নজর রাখতে হবে। কারণ, কোনো কমেন্ট অ্যাডসেন্সের নীতি লঙ্ঘন করলে ওয়েবসাইটের সমস্যা হতে পারে।

৬. সাইট নেভিগেশন:

ইউজার এক্সপেরিয়েন্সের কথা সর্বদাই মাথা রাখতে হবে। এর জন্য সুষ্ঠুভাবে সৃষ্ট সহজ ও স্পষ্ট নেভিগেশন থাকা বাধ্যতামূলক।

গুগল অ্যাডসেন্সের বিজ্ঞাপন কত রকমের হয়?

AdSense ad types
AdSense ad types.

আপনি কি জানেন? গুগল এডসেন্স দ্বারা দেখানো অ্যাড গুলো কিন্তু এক রকমের হয় না। ওয়েবসাইটে গেলে বুঝতে পারবেন, আপনার সামনে বিজ্ঞাপনের প্রকৃতি বেছে নেওয়ার অপশন থাকবে।

কিন্তু আপনি যদি আপনার ওয়েবসাইটের জন্য উপযুক্ত বিজ্ঞাপনের ক্যাটাগরি না বাছতে পারেন, তাহলে আপনার প্রাপ্য রেভিনিউয়ের পরিমাণ কম হতে পারে। আর তাই ভুলভাল অ্যাডের টাইপ না সিলেক্ট করতে চাইলে শুরুতেই জেনে নিতে পারেন অ্যাডের প্রকারভেদ গুলো।

১. ডিসপ্লে অ্যাড:

এই প্রকৃতির অ্যাড উল্লম্বভাবে, অনুভূমিকভাবে, বর্গাকার ফরম্যাটে ওয়েবসাইটে দেখা যায়। পেজ অনুযায়ী এই বিজ্ঞাপন নিজের আকার বদলে নেয়। মোবাইল ও কম্পিউটারের স্ক্রীন অনুযায়ী সাইডবার, কন্টেন্টের প্যারাগ্রাফ ও ফুটারের অবস্থানের সঙ্গে মানিয়ে নিজেকে উপযুক্ত স্থানে বসিয়ে দেয়।

২. ইন-ফীড এড:

আপনার ওয়েবসাইটে কি কন্টেন্ট বা প্রোডাক্ট লিস্টের মতো করে দেখা যাচ্ছে? আর লিস্টের মধ্যেই কি আপনি অ্যাড প্লেস করতে চান? এই দুই প্রশ্নের উত্তর হ্যাঁ হলে আপনি কাজে লাগাতে পারেন In-feed ads-এর। এই অ্যাড আপনার জন্য খুবই কাজের প্রমাণিত হতে পারে।

কন্টেন্টের পারিপার্শ্বিক সাজসজ্জা অনুযায়ী নিজেকে সুন্দরভাবে মানিয়ে ভিজিটারদের সামনে নিজেকে পেশ করে এই অ্যাড। এটি মূলত সীমিত তথা ছোট স্ক্রীনে সবচেয়ে ভালো পারফরম্যান্স দেয়। আর এই কারণে অনেকেই এই অ্যাডকে মোবাইল ফ্রেন্ডলি বলে মনে করে থাকেন।

৩. ইন-আর্টিকল অ্যাড:

নাম শুনেই বোঝা যাচ্ছে এটা কী ধরণের অ্যাড। এই বিজ্ঞাপন মূলত কন্টেন্টের প্যারাগ্রাফের মাঝে দেখতে পাওয়া যায়। এই অ্যাড পাঠকদের এক্সপেরিয়েন্স খারাপ না করেই আঞ্চলিক বিজ্ঞাপন দেখায়। এটি মোবাইল ও কম্পিটারের স্ক্রীন অনুযায়ী নিজের আকার ও ফরম্যাট অপটিমাইজ করতে সক্ষম।

৪. মার্টিপ্লেক্স অ্যাড:

একক অ্যাড ইউনিটের মাধ্যমে গ্রিড ফরম্যাটে একাধিক বিজ্ঞাপন দেখায় এই অপশন। উল্লম্ব ও অনুভূমিকভাবে এই বিজ্ঞাপন দেখতে পাওয়া যায়। এই বিশেষ ক্যাটাগরির অ্যাড কিন্তু সর্বত্র ভালো ফলাফল দেখাবে না। সর্বোচ্চ ইতিবাচক ফল পেতে এই বিশেষ ধরণের বিজ্ঞাপনকে হয় কন্টেন্টের নিচে, নয়তো সাইডবারের মধ্যে রাখতে হবে।

গুগল অ্যাডসেন্সে অ্যাকাউন্ট তৈরি করবেন কীভাবে?

১. আপনাকে প্রথমে গুগলের অ্যাডসেন্স ওয়েবসাইট ভিজিট করতে হবে। সেখানে গিয়ে সাইন আপ বা একাউন্ট রেজিস্টার করতে হবে। এক্ষেত্রে গুগল অ্যাকাউন্ট দিয়েই আপনাকে সাইন ইন করতে হবে। না থাকলে তৈরি করে নিতে হবে।

২. এরপরে নিজের ওয়েবসাইটের URL জমা দিতে হবে। যদি কোনো ওয়েবসাইট না থাকে, তাহলে তৈরি করে নিতে হবে। ওয়েবসাইট আগে থেকে তৈরি করা থাকলে “Add your website url” বেছে নিতে হবে। আর না থাকলে বাছতে হবে “I don’t have a site yet”। দ্বিতীয় অপশনটি সিলেক্ট করলে পরে ওয়েবসাইটের ইউআরএল দেওয়া যাবে।

● সাহায্য ও সাজেশন চাইলে ইচ্ছে অনুযায়ী নির্দিষ্ট অপশনে ক্লিক করতে হবে।
● প্রদত্ত তালিকা থেকে পেমেন্ট দেশের নাম বেছে নিতে হবে।
● অ্যাডসেন্সের সমস্ত শর্তাবলীতে সম্মতি দিতে টিক বক্সে ক্লিক করতে হবে এবং “Start Using AdSense”-এ ক্লিক করতে হবে।

৩. সাইটের অ্যাপ্রুভাল পাওয়া বাধ্যতামূলক। আপনার ওয়েবসাইটটি জমা করা হয়ে গেলে এবার রিভিউয়ের অপেক্ষা করতে হবে। সাধারণত কয়েকদিনের মধ্যে উত্তর চলে আসে। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে ২ থেকে ৪ সপ্তাহ লাগতে পারে।

অ্যাডসেন্সে সাইট জমা দেবেন কীভাবে?

 ১. সাইট ট্যাবে গিয়ে "New Site"-এ ক্লিক করতে হবে।
 ২. এরপরে ওয়েবসাইটের url দিয়ে "save"-এ ক্লিক করতে হবে। 
 ৩. তারপরে সাইটের মালিকানা (Site Ownership) ভেরিফাই করতে হবে। 

সাইটের কোথায় অ্যাড রাখলে আয় বাড়বে?

আপনার সাবমিট করা ওয়েবসাইটটি গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট অ্যাপ্রুভাল পেয়ে গেলে, আপনাকে নিজের সাইটের জন্য ad কোড তৈরি করে সেটিকে সাইটে বসানো শুরু করতে হবে। এমনিতে এই ad আপনি তিন ধরণে প্লেস করতে পারবেন। নিম্নে এই বিষয়ে আলোচনা করা হল,

১. সাইট অনুযায়ী (By Site): এটা মূলত অটো অ্যাড। অর্থাৎ, গুগল এটা সাইটের অবস্থা ও ক্ষমতা অনুযায়ী নিজে থেকে সঠিক স্থান বেছে নিয়ে বিজ্ঞাপন বসিয়ে দেয়।

২. ইউনিট অনুযায়ী (By Unit): অ্যাডের প্রকৃতির উপর ভিত্তি করে নিজের ইচ্ছে মতো নির্দিষ্ট স্থানে বিজ্ঞাপন বসানোর অধিকার দেয় এই ক্যাটাগরি।

৩. গ্লোবাল সেটিং (Global Setting): এই সেকশনে ad সংক্রান্ত সেটিং সর্বস্তরে বদলে দেওয়া যায়।

আপনি আপনার সাইটের জন্য By Unit বাছুন বা By Site, উভয় ক্ষেত্রেই গুগল অ্যাডসেন্স আপনাকে এড কোড তৈরি করে দিবে। সেটা আপনাকে আপনার ওয়েবসাইটের html সোর্স কোডের ও এর মাঝে পেস্ট করে দিতে হবে।

গুগল AdSense থেকে বেশি টাকা আয় করবেন কীভাবে?

গুগল অ্যাডসেন্স থেকে হওয়া আয় দ্বিগুন করতে চাইলে এই বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে।

১. গুগল অ্যাডসেন্স পলিসি অমান্য করলে হবে না। এই পলিসি অনুযায়ী, নিজেরই বিজ্ঞাপনে নিজে ক্লিক করা যাবে না, অবৈধভাবে ট্রাফিক আনা যাবে না, ভিজিটারদের অন্য কোনো খারাপ ওয়েবসাইটে রিডাইরেক্ট করলে হবে না এবং অ্যাডে ক্লিক কেনা যাবে না। উল্লিখিত নিয়মের বাইরে কাজ করলে গুগল আপনার অ্যাকাউন্ট বন্ধ (Disable) করে দিতে পারে। এমনটা হলে আপনার আয়ের পথও বন্ধ হয়ে যাবে।

২. গুগল অ্যাডসেন্স (Google AdSense) ও অ্যানালিটিক্স অ্যাকাউন্ট (Analytics Accounts) পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। এমনটা করলে আপনার সাইটের আয় কোন বিষয় তথা কোন ফ্যাক্টর দ্বারা ইতিবাচক বা নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত হচ্ছে, তা বুঝতে পারবেন। একইসঙ্গে তা বিশ্লেষণ করে কন্টেন্ট স্ট্র্যাটেজি বানিয়ে সাইটের রেভিনিউ বাড়াতে পারবেন।

৩. উন্নত মানের কন্টেন্ট বানাতে হবে। এক্ষেত্রে উন্নত মানের কন্টেন্ট বলতে প্রাসঙ্গিক (ছোট, মাঝারি হোক বা দীর্ঘ) কন্টেন্টকে বোঝানো হয়েছে, যেটা পড়ে পাঠক সেই পেজে টিকে থাকবে এবং ক্লিক করার পরের মুহূর্তেই বেরিয়ে যাবে না।

৪. সাইটের নিচ অনুযায়ী আপনাকে High-CPC কীওয়ার্ড বাছতে হবে। এই কীওয়ার্ডের উপরেই আপনাকে কন্টেন্ট পাবলিশ করতে হবে। যদিও এগুলো রেভিনিউয়ের সঙ্গে সরাসরি জড়িত নয়। তবে, এই ধরণের কীওয়ার্ডগুলো প্রায়শই বিজ্ঞাপনদাতাদের অন্যগুলোর তুলনায় বেশি দৃষ্টি আকর্ষণ করে থাকে।

৫. কোনো বিশেষ ক্যাটাগরির অ্যাড লাভ দিতে অক্ষম হলে ব্লক করতে হবে। মনে করা যাক, কোনো অ্যাড আশাজনক রেভিনিউ দিতে পারছে না। ভিজিটারদের পছন্দের বিষয় না হওয়াতেই এমনটা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে সেই নির্দিষ্ট প্রকৃতির অ্যাড ব্লক করতে হবে।

৬. বেশি রেভিনিউয়ের জন্য একাধিক অ্যাড ইউনিট অ্যাকটিভ করতে হবে। এই অ্যাড ফরম্যাটগুলি পেজের বিভিন্ন জায়গায় বসাতে হবে, যাতে ক্লিকের সম্ভাবনা বাড়ে। তবে বেশি লোভ করলে হবে না! অতিরিক্ত অ্যাডে সাইট ভিজিটার বিরক্ত হয়ে সেকেন্ডের মধ্যে বেরিয়ে যেতে পারে। এমনটা হলে বাউন্স রেট বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যা আপনার সাইটের জন্য সত্যি অনেকটা খারাপ।

৭. সাইটের সঙ্গে ভিজিটারদের এনগেজমেন্ট রেট বাড়াতে হবে। এই রেট বাড়লেই ইম্প্রেশন ও ক্লিকের মাধ্যমে রেভিনিউ বৃদ্ধি পাওয়ার সুযোগ পাবে। এর জন্য সাইট দেরিতে লোড হলে চলবে না। পাশাপাশি ইন্টারনাল ও এক্সটার্নাল লিঙ্ক ব্যবহার করতে হবে এবং প্রয়োজন মতো ফটো ও ভিডিও কন্টেন্টে যুক্ত করতে হবে।

৮. ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনের জন্য অপ্টিমাইজড হতে হবে। এক্ষেত্রে অন-পেজ সিইও (On-page SEO) ও টেকনিক্যাল সিইও (Technical SEO)-এর বিষয়গুলো খুঁটিয়ে দেখতে হবে এবং প্রয়োজন মতো ওয়েবসাইটটি নিয়মিত আপডেট করতে থাকতে হবে।

অবশই পড়ুন: কিভাবে অনলাইনে ছবি বিক্রি করে টাকা ইনকাম করবেন?

FAQ: কিভাবে গুগল অ্যাডসেন্স থেকে ইনকাম করবেন:

১. কিভাবে গুগল এডসেন্স এর জন্য আবেদন করবেন?

সবচেয়ে আগেই আপনাকে Google AdSense-এর ওয়েবসাইটে গিয়ে একটি ফ্রি একাউন্ট তৈরি করে নিতে হবে। AdSense-এর ড্যাশবোর্ডে sites tab-এর মধ্যে গিয়ে নিজের ওয়েবসাইটের লিংক দিয়ে আপনি নিজের সাইটের জন্য এডসেন্স আবেদন করতে পারবেন। মনে রাখবেন, এডসেন্স এর জন্য আবেদন জানাতে আপনার কাছে একটি Google account অবশই থাকতে হবে।

২. গুগল এডসেন্স থেকে আয় করার উপায় কি?

যা আমি উপরে আগেই বলেছি। গুগল এডসেন্স থেকে ইনকাম করার মূল দুটোই উপায় রয়েছে। সেগুলো হলো, নিজের একটি ওয়েবসাইট/ব্লগ সাইট তৈরি করে সেখানে এডসেন্স বিজ্ঞাপন দেখিয়ে ইনকাম করা যেতে পারে। আবার, যদি আপনার একটি ইউটিউব চ্যানেল আছে, সেক্ষেত্রে YouTube Monetization-এর জন্য apply করে ইউটিউবে আপলোড করা ভিডিও গুলোতে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে এডসেন্স থেকে ইনকাম করা যেতে পারে।

৩. গুগল এডসেন্স থেকে কত টাকা আয় করা যাবে?

Google AdSense থেকে আপনি আনলিমিটেড টাকা রোজগার করতে পারবেন। আমি নিজেই এডসেন্স থেকে প্রতিমাসে ৪০০ থেকে ৫০০ ডলার ইনকাম করে চলেছি। তবে মনে রাখবেন, এডসেন্স থেকে টাকা ইনকাম করতে আপনাকে সঠিক নিয়ম অনুসরণ করে নিয়মিত কাজ করতে হবে।

৪. AdSense থেকে ১০০০ ভিজিটে আমি কত উপার্জন করতে পারি?

গুগল এডসেন্স থেকে কত টাকা আয় হবে সেটা মূলত নানান উপাদান গুলোর উপর নির্ভর করে থাকে। যেমন, কি ধরণের টপিকে কনটেন্ট পাবলিশ করছেন, বিজ্ঞাপন প্লেসমেন্ট, ট্রাফিক এর অবস্থান, ট্রাফিক কোয়ালিটি ইত্যাদি। এগুলোর উপর নির্ভর করে এডসেন্স ইনকামের পরিমান কম বেশি হওয়াটা স্বাভাবিক। তবে, সাধারণত প্রতি ১০০০ ভিউ এর জন্য এডসেন্স মোটামোটি $0.2 থেকে $2.5 দিয়ে থাকে।

আজকে আমরা কি জানলাম?

তাহলে বন্ধুরা, যদি আপনি একজন স্টুডেন্ট বা এমন একজন ব্যক্তি যে অনলাইনে কাজ করে পার্ট-টাইম ইনকাম করতে চাইছেন, সেক্ষেত্রে গুগল এডসেন্স আপনার জন্য একটি অনেক দারুন ওয়েবসাইট বা প্লাটফর্ম প্রমাণিত হতে পারে। মনে রাখবেন, এডসেন্স থেকে প্রতিমাসে আনলিমিটেড টাকা আয় করা সম্ভব।

তবে শুরুতে নিয়মিয়ত বজায় রেখে রেগুলার কাজ করতে হবে। এছাড়া, YouTube channel বা Blog website, এই দুধরণের প্লাটফর্মে এডসেন্স বিজ্ঞাপন দেখিয়ে ইনকাম করা সম্ভব। তাই এটা সম্পূর্ণভাবে আপনার উপর থাকছে যে আপনি কি ধরণের কনটেন্ট তৈরি করতে ও পাবলিশ করতে পছন্দ করেন।

গুগলে গিয়ে সার্চ করলেই দেখতে পারবেন যে Google AdSense থেকে হাজার হাজার লোকেরা আনলিমিটেড টাকা রোজগার করে নিচ্ছেন।

Leave a Comment